খাগড়াছড়ি জেলা পুলিশের অফিসিয়াল ফেসবুক পেইজে এক তরুণীর করা যৌন হয়রানির অভিযোগের তড়িৎ ব্যবস্থা নিল পুলিশ। ভুক্তভোগী তরুণীর ধারণ করা ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আপলোড দিয়ে পুলিশের সহযোগীতা চাওয়ার ২৪ ঘন্টার কম সময়ের মধ্যে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আপলোড দেয়া ভিডিও থেকে দেখা যায়, গত ১৪ জানুয়ারী (শুক্রবার) খাগড়াছড়ি পৌর শহরের কলেজ সড়কে টমটম অটো রিক্সায় গন্তব্যে যাচ্ছিলেন ভুক্তভোগী তরুণী। এ সময় টমটম চালক যাত্রীকে(তরুণী) উদ্দেশে করে যৌন হয়রানিমূলক আচরণ করে। ভুক্তভোগী ওই তরুণী কৌশলে টমটম চালকের নেতিবাচক আচরণ ভিডিও ধারণ করেন এবং প্রতিবাদ জানান। ভিডিও করতে দেখে অভিযুক্ত চালক টমটমটি মূল সড়ক থেকে গলিতে নিয়ে পালানোর চেষ্টাকালে ওই তরুণী চিৎকার করেন। ভুক্তভোগী তরুণীর চিৎকারে পথচারীরা টমটমটি দাড়ঁ করায়। এ সময় পথচারীদের কাছে টমটম চালকের নেতিবাচক ব্যবহার সম্পর্কে তুলে ধরেন।
ভুক্তভোগী তরুণীর সাথে ঘটে যাওয়া ঘটনাটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আপলোডের পর ছড়িয়ে পড়ে ইন্টারনেট জগতে। অনেকে খাগড়াছড়ি জেলা পুলিশের অফিসিয়াল ফেসবুক পেইজে পোস্টটি ম্যানশন করে প্রতিকার চান। আর এটি নজরে আসার সাথে সাথে অভিযানে নামে খাগড়াছড়ি সদর থানা পুলিশ। অভিযুক্ত টমটম চালক সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিষয়টি ছড়িয়ে পড়ার খবর পেয়ে পালিয়ে যায়। টমটম চালকের পরিচয় শনাক্তের পর জেলা শহরের মোহাম্মদপুর এলাকায় তাকে ধরতে বাড়িতে যায় পুলিশ। শুক্রবার রাতে তাকে বাড়িতে পাওয়া না গেলেও পরের দিন সকালে অভিভাবকের সহযোগিতায় তাকে করা হয়।
খাগড়াছড়ি সদর থানার অফিসার ইনচার্জ মুহম্মদ রশীদ বলেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেখে জেলা পুলিশ সুপারের নির্দেশে অভিযান শুরু হয়। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে অভিযুক্ত টমটম চালক পালিয়ে যায়। শনিবার সকালে অভিভাবকের সহযোগিতায় তাকে থানায় হাজির করা হয়। পরবর্তীতে ভিকটিম তরুণীর কাছে ক্ষমা চাওয়ায় এবং অভিযুক্ত “না বালক” হওয়ায় মুছলেকা নিয়ে অভিভাবকের জিম্মায় দেয়া হয়।
পুলিশের তড়িৎ হস্তক্ষেপে ভুক্তভোগী তরুণী কৃতজ্ঞতা স্বীকার করে জানান, ফেসবুক পোস্ট নজরে নিয়ে জেলার এসপি(পুলিশ সুপার) যে ব্যবস্থা নিয়েছে সেটি নারীদের স্বাচ্ছন্দ্যে ও ভয়হীন ভাবে চলাফেরার পথকে আরও নিরাপদ করবে। আমি ও আমার পরিবার পুলিশের এমন উদ্যোগকে সাধুবাদ জানায়।
খাগড়াছড়ির পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আব্দুল আজিজ বলেন, পুলিশিং সেবা কার্যক্রম এখন অনেক আধুনিক, কেউ অপরাধ করে ছাড় পাবে না। আমাদের সমাজকে অপরাধ মুক্ত করার জন্য যার যার অবস্থান থেকে সচেতন হওয়া জরুরী। গতকাল (শুক্রবার) সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ঘটনাটি জানতে পেরে সাথে সাথে ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশনা দেয়া হয়। ২৪ ঘন্টারও কম সময়ে অপরাধীকে শনাক্ত করা হয়।
খাগড়াছড়ি জেলা পুলিশের ইতিবাচক এমন উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন নারী ও শিশু অধিকার নিয়ে কাজ করা বিভিন্ন সংগঠন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রসংসার জোয়ারে ভাসছেন পুলিশ সুপার ও জেলা পুলিশের কর্মকাণ্ড।
পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে: মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, এটুআই, বিসিসি, ডিওআইসিটি ও বেসিস